শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

পবিত্র হজ আজ

স্বদেশ ডেস্ক:

পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকূল বাসনা নিয়ে এবার পবিত্র হজ পালন করছেন ভাগ্যবান ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলিম। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্ক, লা শারিকা লাকা।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’- এ ধ্বনিতে আজ বৃহস্পতিবার হজের এই দিনে মুখরিত হবে আরাফাত ময়দান।

ধবধবে সাদা দুই টুকরো ইহরাম পরিহিত অবস্থায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় সূর্যোদয়ের পরই হাজিরা মিনা থেকে রওনা হন আরাফাতের উদ্দেশে। হজের তিন ফরজের মধ্যে ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। হজযাত্রীরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পবিত্র এ স্থানে অবস্থান করবেন। কেউ পাহাড়ের কাছে, কেউবা ইবাদত করবেন সুবিধাজনক জায়গায় বসে। আরাফাতের মসজিদে নামিরাহ থেকে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টার পর হজের খুতবা দেবেন মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা। এ বছর আরবির পাশাপাশি থাকছে আরও ১০ ভাষার খুতবা। এবারও দ্বিতীয়বারের মতো হজের খুতবা বাংলায় অনুবাদ করা হবে।

খুতবা শেষে হাজিরা জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকির-আসকারে ব্যস্ত থাকবেন তারা। এর পর হাজিদের গন্তব্য মুজদালিফার দিকে। মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে সেখানেই রাতযাপন। মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করে পুনরায় মিনায় ফিরবেন। ১০ জিলহজ সেখানে পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

প্রথমে মিনাকে ডানদিকে রেখে দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। এর পর দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া। আর চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। হাজিরা মক্কায় ফিরে কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাঈ (কাবার চারদিকে সাতবার ঘোরা ও সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানো) করে পুনরায় মিনায় ফিরে যাবেন। ১১ জিলহজ সেখানকার খিমায় (তাঁবু) রাতযাপন; দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে মোট ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। এ কাজটি অবশ্য সুন্নত। পর দিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে তিনটি শয়তানের ওপর নিক্ষেপ করবেন সাতটি করে মোট ২১টি পাথর। এ কাজ শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।

করোনার কারণে এবারও ব্যতিক্রমী সব পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাজিদের সেবা দিতে বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে ৪৫টি স্ট্রোক সেন্টার। এর মধ্যে জাবালে রহমত এলাকায় ২৩টি ও মিনা প্রান্তরে থাকবে ২২টি। এ ছাড়া ৪২টি থাকবে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র। হজের স্থানগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিতে কাজ করবে ৩২টি চিকিৎসক দল ও ৩৬টি অ্যাম্বুলেন্স। পাশাপাশি মক্কার মিউনিসিপালিটি বিদ্যুৎ, সড়ক, যোগাযোগ, ট্যানেল, ব্রিজ, টয়লেট ও ড্রেনের ব্যবস্থা দেখাশোনা করছে। অগ্নিকা- ও ভারী বর্ষণে করণীয় নির্ধারণ করবে তাদের জরুরি ইউনিট। দীর্ঘ ৯০ বছরের মধ্যে এবারও মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশসহ বাইরে থেকে হজযাত্রী আসা ছাড়া ছোট পরিসরে পবিত্র হজ পালিত হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধ, বিগ্রহ, বন্যা ও অন্যান্য কারণে ৪০ বারের মতো হজ বন্ধ ছিল। করোনার কারণে এবারও হজযাত্রীরা যথাযথ (১ দশমিক মিটার তথা ৫ ফুট) বজায় রেখে তাওয়াফ, নামাজে অংশ নেওয়া ও সায়ির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877